
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার হয়ে নিহত ৮ বছরের শিশুটির দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার এশার নামাজের পর দ্বিতীয় জানাজা শেষে গ্রামের বাড়ি সোনাকুণ্ডি গোরস্তানে দাফন সম্পন্ন হয়। সন্ধ্যায় মাগুরায় শিশুটির মরদেহ আসার পরপরই ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। রাত পৌনে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মাগুরা স্টেডিয়ামে নামে শিশুর মরদেহবাহী হেলিকপ্টার। এরপর সেখান থেকে শিশুটির মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে করে প্রথম জানাজার জন্য নেওয়া হয় শহরের নোমানী ময়দানে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন হাজারো মানুষ।
হাজারো মানুষের সঙ্গে জানাজায় অংশ নেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠন হাসনাত আবদুল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, মাগুরা জেলা প্রশাসক অহিদুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা।
টানা ৮ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে আজ বৃহস্পতিবার হার মানে মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আট বছর বয়সী শিশুটি। বেলা ১টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর থেকে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার তার মরদেহ নিয়ে রওনা হয়। রাতেই নোমানী ময়দানে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
৫ মার্চ মাগুরাতেই বোনের শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় আট বছরের শিশুটি। তাকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেও তার অবস্থার উন্নতি হয়নি। অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরপর শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সংকটাপন্ন শিশুটিকে গত শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিআইসিইউ) থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরদিন রোববার শিশুটিকে সিএমএইচে পেডিয়াট্রিক আইসিইউতে নেওয়া হয়।
শিশুটির জন্য সিএমএইচের প্রধান সার্জনের নেতৃত্বে আটজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়ে বোর্ড গঠন করা হয়। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) চিকিৎসা চলছিল শিশুটির। গতকাল বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারবার ও বৃহস্পতিবার আরও দুবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (আকস্মিকভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ) হয় শিশুটির।